ইরাকে গণকবরে ১০০ কুর্দি নারী ও শিশুর লাশের সন্ধান
- আপডেট সময় : ১১:২৭:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ৫ বার পড়া হয়েছে
দক্ষিণ ইরাকের মুসান্না প্রদেশের তা’ল আল-শাইখিয়া এলাকায় একটি গণকবরের সন্ধান মিলেছে। এতে কুর্দি নারী ও শিশুসহ প্রায় ১০০ জনের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। ইরাকের তিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ইরাকের তা’ল আল-শাইখিয়া থেকে এএফপি জানায়, ইরাকের তিন কর্মকর্তা বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে ১৯৮০ এর দশকে সাবেক ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের আমলে এদের হত্যা করা হয়।
এএফপির একজন সাংবাদিক বলেছেন, গণকবরটি দক্ষিণ ইরাকের মুসান্না প্রদেশের তা’ল আল-শাইখিয়াতে আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি সেখানকার প্রধান সড়ক থেকে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার (১০-১২ মাইল) দূরে অবস্থিত।
গণকবরের জন্য ইরাকি কর্তৃপক্ষের প্রধান দিয়া করিম বলেছেন, ২০১৯ সালে প্রাথমিকভাবে সন্ধান পাওয়া পর একটি বিশেষজ্ঞ দল এই মাসের শুরুতে কবরটি খননের কাজ শুরু করে। তিনি আরও বলেন, এই স্থানে এটি দ্বিতীয় গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেল।
দিয়া করিম বুধবার এএফপিকে বলেন, ‘মাটির প্রথম স্তর অপসারণ করার পর এ গণকবরটি আবিষ্কৃত হয়। এখানকার লাশগুলো নারী ও শিশুদের। এদের সকলের পরনে কুর্দি বাসন্তী পোশাক বয়েছে। তিনি বলেন লাশ উত্তোলনের চেষ্টা চলছে। সংখ্যার হেরফের হতে পারে।’
১৯৮০-এর দশকে ইরানের সাথে ইরাকের মারাত্মক যুদ্ধের পর, সাদ্দামের সরকার ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে নির্মম ’আনফাল অপারেশন’ চালায়। তাতে প্রায় ১৮০,০০০ কুর্দিকে হত্যা করা হয় বলে মনে করা হয়। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর সাদ্দামকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং আনফাল অভিযানে গণহত্যার অভিযোগে সাদ্দামকে অভিযুক্ত করে তিন বছর পর তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
করিম বলেন, কবরে পাওয়া বিপুল লাশের অনেককে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে কয়েকজনকে জীবিত কবর দেওয়া হতে পারে, কারণ তাদের দেহাবশেষে গুলির কোনো চিহ্ন নেই।
ইরাকের গণকবরের জন্য খননকারী দলের প্রধান আহমেদ কুসাই বলেন, ’আমরা এই কবর খননে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। হত্যা সময় মায়েরা তাদের সন্তানদের বুকে আঁকড়ে রাখায় লাশগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা জড়ানো। গণকবর উত্তোলনের জন্য কর্তৃপক্ষের অংশ দুরগাম কামেল জানায়, তারা তা’ল আল-শাইখিয়াতে লাশ উত্তোলন শুরু করার একই সময়ে আরেকটি গণকবর পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, গণকবরটি নুগ্রাত আল-সালমান কারাগারের কাছে অবস্থিত। এখানে সাদ্দামের কর্তৃপক্ষ ভিন্নমতাবলম্বীদের আটকে রাখতেন। ইরাকি সরকার জানায়, ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সাদ্দামের অধীনে সংঘটিত নৃশংসতা এবং অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ নিখোঁজ হয়।