ঢাকা ০২:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন, ৩ দিনে প্রাথমিক রিপোর্ট বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা পুনঃতদন্ত করবে কমিশন : চেয়ারম্যান গুরুত্বপূর্ণ নথি তলবের পরই সচিবালয়ে আগুন : রিজভী দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা চলছে : সারজিস আলম হাসিনা ও পরিবারের সদস্যদের রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি : অনুসন্ধানে দুদক বিজয় দিবস হ্যান্ডবলের ফাইনালে বিজিবি ও বাংলাদেশ আনসার জাতীয় নিরাপত্তা ও অখণ্ডতা রক্ষায় সেনাবাহিনী সজাগ ষড়যন্ত্রে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না : এলজিআরডি উপদেষ্টা সচিবালয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক আটক সমাজের বোনম্যারোতে সমস্যা, এখন দরকার নতুন ব্যবস্থা : জামায়াত আমির

চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির সোনালী প্রবেশদ্বার : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ ৯ বার পড়া হয়েছে

নরওয়ের সাথে বাংলাদেশের সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির সোনালী প্রবেশদ্বার। সরকার চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সাথে সফলভাবে নৌবাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ।

বাংলাদেশী বিভিন্ন পণ্য বিশেষ করে আরএমজি (রেডিমেড গার্মেন্টস) পণ্য রপ্তানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে নরওয়েতেও বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানী উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নরওয়েসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্যান্য দেশসমূহ থেকে বাংলাদেশও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী নিয়মিত আমদানি করে থাকে। দবাংলাদেশের আরএমজি পণ্য ইতোমধ্যে নরওয়ের বাজারে গুরুত্বের সাথে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহতে কার্গো পৌঁছাতে ৪০ থেকে ৪৫ দিন বা তার বেশি সময় লাগে, যেখানে নরওয়েতে সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপিত হলে চট্টগ্রাম থেকে নরওয়ের যেকোনো বন্দরে ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য পৌঁছানো সম্ভব। এতে গড়ে ১৮ থেকে ২৩ দিন কম সময় লাগবে।

এছাড়াও, মালমাল বহন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। এ প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ ও নরওয়ের মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিশেষ নৌ-চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন উপদেষ্টার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। নরওয়ের বিভিন্ন কোম্পানি জাহাজ শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে বাংলাদেশে কাজ করতে আগ্রহী।

এ সময় গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন বলে উপদেষ্টাকে অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত। উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং মোংলা, পায়রাসহ অন্যান্য বন্দরও পরিদর্শনের আহ্বান জানান। উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগের অত্যন্ত অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। ভূ-কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ হাবে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়াও আমাদের মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর দুটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। মোংলা বন্দরকে একটি গ্রীণপোর্ট হিসেবে তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়াও, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ দুটি বন্দরের ডকইয়ার্ড নির্মাণেই নরওয়ে কারিগরী ও আর্থিকভাবে বিনিয়োগ করতে পারে। উপদেষ্টা আরো বলেন, নরওয়ে সরকারের মতো বাংলাদেশ সরকারও সমুদ্রে গ্রীণ হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বন্দরগুলোকে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনতে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে। নরওয়ে সরকার বাংলাদেশের বন্দরগুলোকে গ্রীণ পোর্টে রূপান্তরিত করতে সহযোগিতা করবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।

নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এ সকল বিষয়ে বাংলাদেশকে নরওয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি জাহাজ চলাচলের বাতিঘর নির্মাণসহ জাহাজে বিদ্যুতায়ন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, মেরিটাইম সেক্টরে বাংলাদেশের শক্তিশালী অংশগ্রহণ রয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থার (আইএমও) সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টরের বিভিন্ন নীতি নির্ধারনী বিষয়েও বাংলাদেশের ভূমিকা রয়েছে মর্মে তিনি মত প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা আসন্ন ২০২৫ সালে আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে নরওয়ের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, নরওয়ে সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে।

এ সময়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম, মন্ত্রণালয় এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির সোনালী প্রবেশদ্বার : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ১১:৪৬:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

নরওয়ের সাথে বাংলাদেশের সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির সোনালী প্রবেশদ্বার। সরকার চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সাথে সফলভাবে নৌবাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ।

বাংলাদেশী বিভিন্ন পণ্য বিশেষ করে আরএমজি (রেডিমেড গার্মেন্টস) পণ্য রপ্তানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে নরওয়েতেও বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানী উল্লেখ্যযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নরওয়েসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্যান্য দেশসমূহ থেকে বাংলাদেশও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী নিয়মিত আমদানি করে থাকে। দবাংলাদেশের আরএমজি পণ্য ইতোমধ্যে নরওয়ের বাজারে গুরুত্বের সাথে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহতে কার্গো পৌঁছাতে ৪০ থেকে ৪৫ দিন বা তার বেশি সময় লাগে, যেখানে নরওয়েতে সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপিত হলে চট্টগ্রাম থেকে নরওয়ের যেকোনো বন্দরে ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য পৌঁছানো সম্ভব। এতে গড়ে ১৮ থেকে ২৩ দিন কম সময় লাগবে।

এছাড়াও, মালমাল বহন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। এ প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশ ও নরওয়ের মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিশেষ নৌ-চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন উপদেষ্টার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। নরওয়ের বিভিন্ন কোম্পানি জাহাজ শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে বাংলাদেশে কাজ করতে আগ্রহী।

এ সময় গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন বলে উপদেষ্টাকে অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত। উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং মোংলা, পায়রাসহ অন্যান্য বন্দরও পরিদর্শনের আহ্বান জানান। উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগের অত্যন্ত অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। ভূ-কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ হাবে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়াও আমাদের মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর দুটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। মোংলা বন্দরকে একটি গ্রীণপোর্ট হিসেবে তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়াও, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ দুটি বন্দরের ডকইয়ার্ড নির্মাণেই নরওয়ে কারিগরী ও আর্থিকভাবে বিনিয়োগ করতে পারে। উপদেষ্টা আরো বলেন, নরওয়ে সরকারের মতো বাংলাদেশ সরকারও সমুদ্রে গ্রীণ হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বন্দরগুলোকে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনতে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে। নরওয়ে সরকার বাংলাদেশের বন্দরগুলোকে গ্রীণ পোর্টে রূপান্তরিত করতে সহযোগিতা করবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।

নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এ সকল বিষয়ে বাংলাদেশকে নরওয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি জাহাজ চলাচলের বাতিঘর নির্মাণসহ জাহাজে বিদ্যুতায়ন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, মেরিটাইম সেক্টরে বাংলাদেশের শক্তিশালী অংশগ্রহণ রয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থার (আইএমও) সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টরের বিভিন্ন নীতি নির্ধারনী বিষয়েও বাংলাদেশের ভূমিকা রয়েছে মর্মে তিনি মত প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা আসন্ন ২০২৫ সালে আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে নরওয়ের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, নরওয়ে সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে।

এ সময়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম, মন্ত্রণালয় এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।