পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন টক-শো দেখেন, কেমন একটা অস্থিরতা চলছে দেশে

- আপডেট সময় : ১২:২৫:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। কিছু নির্ধারিত বিষয় অনির্ধারিত ও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক ঐক্য জরুরি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান এই সময়টা আমাদের জন্য কঠিন পরীক্ষার। কতগুলো নির্ধারিত বিষয়কেও আমরা অনির্ধারিত করে ফেলছি, অনিশ্চিত করে ফেলছি। আজকে সংস্কার, নির্বাচন এই কথাগুলো অনেক বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। তাই সকলের উচিত হবে সকল রাজনৈতিক দল-গোষ্ঠি সকলের দায়িত্ব হবে অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।
আজ রোববার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে দলের প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডির বাসায় আবদুল্লাহ আল নোমান মারা যান।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতি এমন একটা সন্ধিক্ষণে আছে, যেখানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী একটা বিস্ফোরণ হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। একটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পরিবর্তনের সময়ই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এখন জনগণকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিদিনই রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে হচ্ছে। আমরা আমাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি যে একটা আলোচনার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থেই সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য একটা সমাধান বেরিয়ে আসবে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব আমরা পাবো। নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ এখনো সুগম হয়নি। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়ে নির্বাচিত সংসদ আমরা এখনো পাইনি। এ কারণে আমাদের অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে, দৃঢ়তার সঙ্গে, সচেতনতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। দলকে আরও সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করতে হবে। আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, শহীদ জিয়া গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখতেন, আবদুল্লাহ আল নোমান তা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। তিনি সবচেয়ে প্রতিকূল পরিবেশেও আন্দোলন তৈরি করতে পারতেন। মানুষকে একত্রিত করার ক্ষমতা তার ছিলো। সেজন্য আজ বারবার তার কথা মনে পড়ছে।
বিএনপি নিয়ে শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ও তারেক রহমান যে স্বপ্ন দেখছেন, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অবশ্যই আব্দুল্লাহ আল নোমানের শূন্যতা অনুভব করি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের একজন ছাত্র দল কর্মী প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. জাহেদুল ইসলাম পারভেজ, তাকে হত্যা করা হয়েছে। কারা হত্যা করেছে আমরা জানি না। তবে একথা নিসন্দেহে বলা যায়, যারা এই সময়ে একজন ত্যাগী ছাত্র নেতাকে হত্যা করতে পারে তারা নিসন্দেহে বাংলাদেশের এই পরিবর্তনে আন্দোলনের সঙ্গে কোনো মতেই সংযুক্ত ছিলো না।
বিএনপির মহাসচিব আক্ষেপ করে বলেন, আজকে যারা বাংলাদেশে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তারা কখনই বাংলাদেশের পক্ষের মানুষ নন। তারা গণতন্ত্রের পক্ষের মানুষ নন। তারা শ্রমজীবী মানুষের পক্ষের মানুষ নন।শ্রমিকদের সংস্কার কোথায়? এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, এতো সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু শ্রমজীবী মানুষদের শ্রমিকদের কথা তো কোথাও শুনতে পারছি না। তিনি বলেন, আমাদের ৩১ দফার মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের কথা আছে কিন্তু এই সংস্কার কমিশনের মধ্যে এ নিয়ে কি আছে আমি জানি না। কৃষকরা তার পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায়না, পানি পায় না যখন পানির প্রয়োজন হয় সেচের জন্য, শ্রমিকদের সমস্যার সমাধান হয় না, শ্রমিকদের সন্তানেরা ভালো স্কুলে যেতে পারে না, অথচ এরাই হচ্ছে দেশের বড় অংশ।
এ সময় গত ১৫ বছরের আন্দোলন কতজন শ্রমিক আত্মহুতি দিয়েছে, নির্যাতিন হয়েছে তার তালিকা শ্রমিক দলের তৈরি করা উচিত বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব। শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু’র সঞ্চালনায় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। প্রয়াত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।