যুদ্ধাবস্থা না থাকলে, অন্য দেশের সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা ঘটে না
- আপডেট সময় : ১১:৫৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১২ বার পড়া হয়েছে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ বলেছেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ভারতকে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উদ্বেগ নিরসন করতে হবে। তিনি ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক : প্রত্যাশা, প্রতিবন্ধকতা ও ভবিষ্যত’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে একথা বলেন। তৌহিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের পূর্ববর্তী (ক্ষমতাচ্যুত) সরকার ভারতের উদ্বেগ নিরসন করেছিল। কিন্তু ভারত বাংলাদেশের উদ্বেগ নিরসন করেনি।
সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ (পিএসএস) রাজধানীতে তাদের ক্যাম্পাসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তৌহিদ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি বা সীমান্তে হত্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ভারতকে এ বিষয়গুলোর দায় নিতে হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যুদ্ধাবস্থা না থাকলে, অন্য দেশের সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা ঘটে না।’ সীমান্তে হত্যার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ অপরাধ করে থাকে, তাহলে আদালতে তার বিচার করা উচিত। তাকে হত্যা করা উচিত নয়। তৌহিদ বিশেষ করে ৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতে আগ্রাসী মিডিয়া প্রচারণার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের বক্তব্য দু’দেশের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ক্ষতিকর।
উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘এ ধরনের একটি জটিল সম্পর্কের মধ্যে, বিশেষ করে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি সম্পর্কে আমাদের (বাংলাদেশ) মিডিয়া সত্য-নিরীক্ষা ও সঠিক কভারেজ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও উপদেষ্টা ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাস্তবতা মেনে নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দু’দেশের সম্পর্কের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। এটাই বাস্তবতা। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা আশাবাদী থাকতে চায় যে ‘আমরা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সুরক্ষিত নিশ্চিত করে, ভারতের সাথে একটি ভাল সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হব।’
তৌহিদ পররাষ্ট্রনীতিতে জাতীয় ঐকমত্যের গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে বাংলাদেশ তার সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি। এ সময় উপদেষ্টা, বিশেষ করে মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকরা অন্যান্য দেশের ভারতীয় শ্রমিকদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম আয় করে। কর্মে দক্ষতার ঘটতি ও ইংরেজিতে পারদর্শিতার অভাবে এমনটি ঘটে।
গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান ড. এস এম আসাদুজ্জামান রিপন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুর রবসহ বিশিষ্ট প্যানেলিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।
গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী এবং এটি সঞ্চালনা করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এম জসিম উদ্দিন।