ঢাকা ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে চীনের ইউনান প্রদেশের গভর্নরের সাক্ষাৎ নগরীর যানজট নিরসনে হকার ব্যবস্থাপনা জরুরি : চসিক মেয়র পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন টক-শো দেখেন, কেমন একটা অস্থিরতা চলছে দেশে আগামী প্রজন্মকে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ারও আহ্বান: দুদক চেয়ারম্যান ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার হলে নিষিদ্ধ সামগ্রীসহ প্রবেশ করা যাবে না রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: জাপান রাষ্ট্রদূত দ্রুত ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করবে টাইগাররা: সালাহউদ্দিন চলতি গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে: পিডিবি চেয়ারম্যান সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনে ভালো ফল পাওয়া যাবে না: তোফায়েল আহমেদ রাজধানীর ফকিরাপুলে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ

সংস্কার ও বিচারের আগে নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে: জামায়াত আমির

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে, যেন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে। তাই জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সরকারকে ৩টি শর্ত পূরণ করতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে একটি ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘সাউথ এশিয়া সম্পর্ক বিষয়ক ডেলিগেশন’ এর চেয়ারম্যান মি. শেরবান ডিমিত্রি স্তুরজার আমন্ত্রণে গত ৭ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ইউরোপ এবং ১১ ও ১২ এপ্রিল যুক্তরাজ্য সফর করে।

এ সফরের ওপর ভিত্তি করে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জামায়াতের ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম এবং জামায়াত আমিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান চৌধুরী।ইউরোপের কয়েকটি দেশের সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউরোপিয়ান কমিশন, ইউরোপিয়ান কাউন্সিল এবং বেলজিয়াম সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের জনগণের প্রয়োজন এবং প্রত্যাশার কথা বলেছি।

তিনি বলেন, আমাদের এ সফরে লক্ষ্য ছিল সভ্য এবং আধুনিক এ বিশ্বের উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র ইউরোপের সাথে আমাদের দেশের সম্পর্ককে ঘনিষ্ঠ করা। নতুন বাংলাদেশের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া এবং দেশের মর্যাদাকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছানোর বিরামহীন প্রচেষ্টা। আমাদের রাজনীতির মূল উপপাদ্যই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ, দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। এই সফরে পর্যায়ক্রমে ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের ফরেন পলিসি অ্যাডভাইজার মিস ভিরোনিকা মুসিলোভার, বাই লেটারেল এশিয়া এন্ড ওশিয়ান, বেলজিয়ামের গভর্নরের প্রতিনিধি ফাংকোস ডিলহিয়ার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে বলে জামায়াতের আমির জানান। তিনি জানান, তাদের আরেকটি মিটিং হয়েছে ডিরেক্টর জেনারেল ফর মাইগ্রেশন এন্ড হোম অ্যাফিয়ার্স ইউরোপীয়ন মাইকেল শটার‘র সাথে।

তাদের বিগ কনসার্ন ছিল মাইগ্রেশন নিয়ে। মাইগ্রেশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া লোকেরা বৈধ পথে কোনো দেশে আশ্রয় নেন না। এটি তাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। নিঃসন্দেহে তারা যে দেশ থেকে মাইগ্রেশন করেন সেই দেশের জন্য এটা কনসার্নের বিষয়। এরপরে ইউরোপীয়ান কমিশনের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মি. চালর্স হোয়াটলি। পরের মিটিং ছিল অনারেবল ডিরেক্টর বেলজিয়াম ইকোনমিক মিশনস এন্ড স্টেট ভিজিট মিস. রোজ ডোনক এর সাথে। জামায়াত আমির বলেন, আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে গণতন্ত্রকে সংহত করা এবং টেকসই করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ২৬টি দেশ নিয়ে গঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন; এর অধিকাংশ রাষ্ট্রই আমাদের সাথে ব্যবসা, শিক্ষা, লেবার সমস্যা নিয়ে কথা বলেছে।

এক্ষেত্রে আমরা তাদের অভিজ্ঞতার সহযোগিতা চেয়েছি। এর মাঝে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো তাদের দেশে ফেয়ার নির্বাচন করে থাকেন। তাদের দেশের নির্বাচনের সেই সিস্টেমগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো সম্পর্কে আমাদের জানার সুযোগ হয়েছে। আমাদের আগামী নির্বাচন যাতে ফেয়ার ও গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য কথা বলেছি। পাশাপাশি তাদের দেশগুলো কীভাবে ন্যাশনাল ইউনিটিকে দিন দিন শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেল তা বুঝার চেষ্টা করেছি। একটা দেশের স্থিতিশীলতা, তার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য দলমত নির্বিশেষে দেশের উন্নয়ন কীভাবে করে তা তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যাপারে কথা হয়েছে।

আমাদের প্রধান রপ্তানিই হচ্ছে গার্মেন্টস পণ্য আর ইউরোপ হচ্ছে বড় বায়ার। তাদের আমাদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমাদের একটা বিশাল ক্রাইসিস নিয়ে তাদের সাথে শেয়ার করেছি। সেটা হলো ১.৬ মিলিয়ন রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের মতো তারাও মানুষ। আমাদের মতো তাদেরও একটা ঠিকানা ছিল। তাদের সম্মান ও মর্যাদার সাথে তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে পুনর্বাসন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের দেশের নির্বাচন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। নির্বাচন কীভাবে হবে কখন হবে? আমরা বলেছি অনেক ত্যাগ এবং চেষ্টার বিনিময়ে যে পরিবেশ এসেছে এই পরিবেশ ৩টা ম্যান্ডেটোরি জিনিস দাবি করছে। নম্বর ওয়ান দৃশ্যমান গ্রহণযোগ্য মৌলিক সংস্কার।

প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো না করে যদি নির্বাচন হয় তবে এই নির্বাচন গণতন্ত্রের কোন ভিত্তি রচনা করতে পারবে না। অতীতের যে নির্বাচনগুলো দেশ এবং জাতি ও বিশ্বের কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য হয়নি সে রকমের হয়ত আরেকটি খারাপ নির্বাচন হবে। আমরা ঐ নির্বাচন চাই না। হাজার প্রাণের বিনিময় হাজার হাজার পঙ্গুত্বের বিনিময়, আহত হওয়ার বিনিময়, রক্তের বিনিময় যে পরিবর্তন এসেছে সেই পরিবর্তনে অবশ্যই সংস্কার সাধন করতে হবে। এ সংস্কারে যদি সহযোগিতার ঘাটতি থাকে কিংবা সংস্কার যদি না হয় তাহলে দেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, সংস্কারের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা হোক। সে দাবি পূরণ না হওয়ার কারণে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে।

এ অবস্থায় দেশে নির্বাচন হওয়ার পূর্বে দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য, মৌলিক সংস্কার করতে হবে। মধ্য ফেব্রুয়ারি সময়সীমা নির্বাচনের জন্য কঠিন নয়। শর্তগুলো পূরণ হলে নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে নির্বাচন হতে পারে। এক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলের উচিত সরকারকে সাহায্য করা। যতদ্রুত তারা সরকারের সাথে সমন্বয় করবে তত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সংস্কারে যদি সহযোগিতার ঘাটতি থাকে, তাহলে যে পরিস্থিতি হবে তার দায় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা, শফিক বলেন, ‘সফরের সময় তারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

তবে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তারা কেবল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন।’সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি ড. হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল ও এড. এহসানুল মাহবুবু জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সংস্কার ও বিচারের আগে নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে: জামায়াত আমির

আপডেট সময় : ১২:২১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে, যেন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে। তাই জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সরকারকে ৩টি শর্ত পূরণ করতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে একটি ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘সাউথ এশিয়া সম্পর্ক বিষয়ক ডেলিগেশন’ এর চেয়ারম্যান মি. শেরবান ডিমিত্রি স্তুরজার আমন্ত্রণে গত ৭ এপ্রিল থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ইউরোপ এবং ১১ ও ১২ এপ্রিল যুক্তরাজ্য সফর করে।

এ সফরের ওপর ভিত্তি করে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জামায়াতের ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম এবং জামায়াত আমিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান চৌধুরী।ইউরোপের কয়েকটি দেশের সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউরোপিয়ান কমিশন, ইউরোপিয়ান কাউন্সিল এবং বেলজিয়াম সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের জনগণের প্রয়োজন এবং প্রত্যাশার কথা বলেছি।

তিনি বলেন, আমাদের এ সফরে লক্ষ্য ছিল সভ্য এবং আধুনিক এ বিশ্বের উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র ইউরোপের সাথে আমাদের দেশের সম্পর্ককে ঘনিষ্ঠ করা। নতুন বাংলাদেশের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া এবং দেশের মর্যাদাকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছানোর বিরামহীন প্রচেষ্টা। আমাদের রাজনীতির মূল উপপাদ্যই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ, দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। এই সফরে পর্যায়ক্রমে ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের ফরেন পলিসি অ্যাডভাইজার মিস ভিরোনিকা মুসিলোভার, বাই লেটারেল এশিয়া এন্ড ওশিয়ান, বেলজিয়ামের গভর্নরের প্রতিনিধি ফাংকোস ডিলহিয়ার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে বলে জামায়াতের আমির জানান। তিনি জানান, তাদের আরেকটি মিটিং হয়েছে ডিরেক্টর জেনারেল ফর মাইগ্রেশন এন্ড হোম অ্যাফিয়ার্স ইউরোপীয়ন মাইকেল শটার‘র সাথে।

তাদের বিগ কনসার্ন ছিল মাইগ্রেশন নিয়ে। মাইগ্রেশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া লোকেরা বৈধ পথে কোনো দেশে আশ্রয় নেন না। এটি তাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। নিঃসন্দেহে তারা যে দেশ থেকে মাইগ্রেশন করেন সেই দেশের জন্য এটা কনসার্নের বিষয়। এরপরে ইউরোপীয়ান কমিশনের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মি. চালর্স হোয়াটলি। পরের মিটিং ছিল অনারেবল ডিরেক্টর বেলজিয়াম ইকোনমিক মিশনস এন্ড স্টেট ভিজিট মিস. রোজ ডোনক এর সাথে। জামায়াত আমির বলেন, আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে গণতন্ত্রকে সংহত করা এবং টেকসই করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ২৬টি দেশ নিয়ে গঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন; এর অধিকাংশ রাষ্ট্রই আমাদের সাথে ব্যবসা, শিক্ষা, লেবার সমস্যা নিয়ে কথা বলেছে।

এক্ষেত্রে আমরা তাদের অভিজ্ঞতার সহযোগিতা চেয়েছি। এর মাঝে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো তাদের দেশে ফেয়ার নির্বাচন করে থাকেন। তাদের দেশের নির্বাচনের সেই সিস্টেমগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো সম্পর্কে আমাদের জানার সুযোগ হয়েছে। আমাদের আগামী নির্বাচন যাতে ফেয়ার ও গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য কথা বলেছি। পাশাপাশি তাদের দেশগুলো কীভাবে ন্যাশনাল ইউনিটিকে দিন দিন শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেল তা বুঝার চেষ্টা করেছি। একটা দেশের স্থিতিশীলতা, তার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য দলমত নির্বিশেষে দেশের উন্নয়ন কীভাবে করে তা তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যাপারে কথা হয়েছে।

আমাদের প্রধান রপ্তানিই হচ্ছে গার্মেন্টস পণ্য আর ইউরোপ হচ্ছে বড় বায়ার। তাদের আমাদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমাদের একটা বিশাল ক্রাইসিস নিয়ে তাদের সাথে শেয়ার করেছি। সেটা হলো ১.৬ মিলিয়ন রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের মতো তারাও মানুষ। আমাদের মতো তাদেরও একটা ঠিকানা ছিল। তাদের সম্মান ও মর্যাদার সাথে তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে পুনর্বাসন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের দেশের নির্বাচন বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। নির্বাচন কীভাবে হবে কখন হবে? আমরা বলেছি অনেক ত্যাগ এবং চেষ্টার বিনিময়ে যে পরিবেশ এসেছে এই পরিবেশ ৩টা ম্যান্ডেটোরি জিনিস দাবি করছে। নম্বর ওয়ান দৃশ্যমান গ্রহণযোগ্য মৌলিক সংস্কার।

প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো না করে যদি নির্বাচন হয় তবে এই নির্বাচন গণতন্ত্রের কোন ভিত্তি রচনা করতে পারবে না। অতীতের যে নির্বাচনগুলো দেশ এবং জাতি ও বিশ্বের কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য হয়নি সে রকমের হয়ত আরেকটি খারাপ নির্বাচন হবে। আমরা ঐ নির্বাচন চাই না। হাজার প্রাণের বিনিময় হাজার হাজার পঙ্গুত্বের বিনিময়, আহত হওয়ার বিনিময়, রক্তের বিনিময় যে পরিবর্তন এসেছে সেই পরিবর্তনে অবশ্যই সংস্কার সাধন করতে হবে। এ সংস্কারে যদি সহযোগিতার ঘাটতি থাকে কিংবা সংস্কার যদি না হয় তাহলে দেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, সংস্কারের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা হোক। সে দাবি পূরণ না হওয়ার কারণে নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে।

এ অবস্থায় দেশে নির্বাচন হওয়ার পূর্বে দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য, মৌলিক সংস্কার করতে হবে। মধ্য ফেব্রুয়ারি সময়সীমা নির্বাচনের জন্য কঠিন নয়। শর্তগুলো পূরণ হলে নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে নির্বাচন হতে পারে। এক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলের উচিত সরকারকে সাহায্য করা। যতদ্রুত তারা সরকারের সাথে সমন্বয় করবে তত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সংস্কারে যদি সহযোগিতার ঘাটতি থাকে, তাহলে যে পরিস্থিতি হবে তার দায় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা, শফিক বলেন, ‘সফরের সময় তারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

তবে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তারা কেবল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন।’সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি ড. হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল ও এড. এহসানুল মাহবুবু জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন।