ঢাকা ১২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ দফা দাবি আমরা সকল জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই : মির্জা ফখরুল নির্বাচনে কারা আসবে বা আসবে না, সেই সিদ্ধান্ত কমিশনের : বদিউল আলম চাঁদাবাজি আগেও হয়েছে এখনো হচ্ছে, শুধু হাতবদল হয়েছে: ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান গত ৫ আগষ্ট পুলিশের লুট হওয়া ১টি অস্ত্র উদ্ধার শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন ডিসেম্বরের ২১ দিনে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে চাঁদপুরে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বহু যাত্রী উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন আড়াই মাস ধরে নষ্ট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬ বার পড়া হয়েছে

Oplus_131072

মোঃ আজগার আলী, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে নষ্ট হয়ে আছে। এতে করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগী ব্রেইন বা অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে সরকারের দৈনিক রাজস্ব আয়ও হাত ছাড়া হচ্ছে।

হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা বলছেন, সিটি স্ক্যান মেশিনটির কুলার ও দুটি হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়েছে। দ্রুত মেরামত না করলে অন্যান্য মূল্যবান পার্টস নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, সিটি স্ক্যান মেশিনটি নষ্ট বা সমস্যা দেখা দেওয়ার পর তা জরুরী মেরামতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার জানানোর পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাপান থেকে আমদানিকৃত ১০ কোটি টাকা মূল্যের সিটি স্ক্যান মেশিনটি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে স্থাপন করা হয়। সিটি স্ক্যান মেশিনটি স্থাপনের পর জেলা ও জেলার বাইরে থেকে সাধারণ রোগিরা কম খরচে ব্রেইনসহ অন্যান্য পরীক্ষা করেন। এখানে ব্রেইন পরীক্ষা ২ হাজার, বুকের পরীক্ষা ২ হাজার ৫০০ টাকা ও পেটের পরীক্ষা ৪ হাজার টাকায় করা হয়। কিন্তু ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গত ৩০ আগস্ট হতে মূল্যবান সিটি স্ক্যান মেশিনটির সবধরনের পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের টেকনোলজিস্ট আব্দুল হালিম জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি স্থাপনের পর একটানা ৭ বছর সার্ভিস দিয়েছে। যদিও এর ওয়ারেন্টি ছিলো পাঁচ বছরের। সে হিসাবে দুই বছর আগেই মেশিনটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। তার পরও ভালো সার্ভিস দিচ্ছিলো।

তিনি আরও বলেন, মেশিনটিতে খুবই কম খরচে সাধারণ রোগী ব্রেইন, বুক ও পেটের পরীক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু মেশিনের কুলার ও দুটি হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গত ৩০ আগস্ট থেকে বন্ধ আছে। তিনি আরও বলেন, জরুরীভাবে এটি মেরামত করা না গেলে অন্যান্য মূল্যবান পার্টসও নষ্ট হতে পারে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ জেলার সাধারণ মানুষের সরকারি খরচে উন্নত চিকিৎসার জন্য এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই আসেন। কিন্তু সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের সিটি স্ক্যান মেশিনটি একটানা আড়াই মাস নষ্ট হয়ে পড়ে থাকবে তা ভাবা যায় না। তিনি সাধারণ রোগিদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত মেশিনটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক ডাক্তার মোঃ কুরতই-খোদা জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গত আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এটি দ্রুত মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে একাধিকবার জানানো হয়েছে। এমনকি আমি নিজেও দুই তিনবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে জানিয়েছি দ্রুত মেরামত করার জন্য। কিন্তু তাতেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এতে করে প্রতিদিন দূর-দূরন্ত থেকে আসা সাধারণ রোগী এসে ফিরে যাচ্ছেন। তবে এটি মেরামত করতে খরচ হবে ৫৮ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি আড়াই মাস বন্ধ রয়েছে তা তিনি জানতেন না। হাসপাতালের তত্ত্ববধায়কের সাথে কথা বলে দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নিবেন বলে জানান।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন আড়াই মাস ধরে নষ্ট

আপডেট সময় : ১০:২২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

মোঃ আজগার আলী, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে নষ্ট হয়ে আছে। এতে করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগী ব্রেইন বা অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে সরকারের দৈনিক রাজস্ব আয়ও হাত ছাড়া হচ্ছে।

হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা বলছেন, সিটি স্ক্যান মেশিনটির কুলার ও দুটি হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়েছে। দ্রুত মেরামত না করলে অন্যান্য মূল্যবান পার্টস নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, সিটি স্ক্যান মেশিনটি নষ্ট বা সমস্যা দেখা দেওয়ার পর তা জরুরী মেরামতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার জানানোর পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাপান থেকে আমদানিকৃত ১০ কোটি টাকা মূল্যের সিটি স্ক্যান মেশিনটি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে স্থাপন করা হয়। সিটি স্ক্যান মেশিনটি স্থাপনের পর জেলা ও জেলার বাইরে থেকে সাধারণ রোগিরা কম খরচে ব্রেইনসহ অন্যান্য পরীক্ষা করেন। এখানে ব্রেইন পরীক্ষা ২ হাজার, বুকের পরীক্ষা ২ হাজার ৫০০ টাকা ও পেটের পরীক্ষা ৪ হাজার টাকায় করা হয়। কিন্তু ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গত ৩০ আগস্ট হতে মূল্যবান সিটি স্ক্যান মেশিনটির সবধরনের পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের টেকনোলজিস্ট আব্দুল হালিম জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি স্থাপনের পর একটানা ৭ বছর সার্ভিস দিয়েছে। যদিও এর ওয়ারেন্টি ছিলো পাঁচ বছরের। সে হিসাবে দুই বছর আগেই মেশিনটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। তার পরও ভালো সার্ভিস দিচ্ছিলো।

তিনি আরও বলেন, মেশিনটিতে খুবই কম খরচে সাধারণ রোগী ব্রেইন, বুক ও পেটের পরীক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু মেশিনের কুলার ও দুটি হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গত ৩০ আগস্ট থেকে বন্ধ আছে। তিনি আরও বলেন, জরুরীভাবে এটি মেরামত করা না গেলে অন্যান্য মূল্যবান পার্টসও নষ্ট হতে পারে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ জেলার সাধারণ মানুষের সরকারি খরচে উন্নত চিকিৎসার জন্য এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই আসেন। কিন্তু সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের সিটি স্ক্যান মেশিনটি একটানা আড়াই মাস নষ্ট হয়ে পড়ে থাকবে তা ভাবা যায় না। তিনি সাধারণ রোগিদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত মেশিনটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক ডাক্তার মোঃ কুরতই-খোদা জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গত আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এটি দ্রুত মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে একাধিকবার জানানো হয়েছে। এমনকি আমি নিজেও দুই তিনবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে জানিয়েছি দ্রুত মেরামত করার জন্য। কিন্তু তাতেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এতে করে প্রতিদিন দূর-দূরন্ত থেকে আসা সাধারণ রোগী এসে ফিরে যাচ্ছেন। তবে এটি মেরামত করতে খরচ হবে ৫৮ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি আড়াই মাস বন্ধ রয়েছে তা তিনি জানতেন না। হাসপাতালের তত্ত্ববধায়কের সাথে কথা বলে দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নিবেন বলে জানান।