আমদানি-রফতানি সহজ করতে ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো’ উদ্বোধন
- আপডেট সময় : ১১:৪৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫ ৩ বার পড়া হয়েছে
সরকার আমদানি-রফতানির সার্বিক প্রক্রিয়া আরো সহজ করতে শুল্কসংক্রান্ত সংস্থাগুলোকে অনলাইনে একই জায়গায় আনার জন্য ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো’ (বিএসডব্লিউ) চালু করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাজধানীর একটি হোটেল ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো’ (বিএসডব্লিউ) নামের একটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা জানান। বিএসডব্লিউ’ চালু করার বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বড় সাফল্য- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে পুরো ব্যবসায় একটি পরিবর্তন আসবে। এই ধরনের একটি সিস্টেম খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যদি পুরোপুরি ডিজিটাইজড না হই, তাহলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না।
২০১৭ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ করে আমদানি ও রফতানি প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যে সাতটি সংস্থাকে একই ব্যবস্থার অধীনে এনে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডোর (এনএসডব্লিউ) চালু করে। এখন থেকে এটি ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো’ (বিএসডব্লিউ) নামে পরিচালিত হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে এই সাতটি সংস্থা কোনো কাগজপত্রের ব্যবহার করবে না। তাদের সব কার্যক্রম অনলাইনে হবে।বিএসডব্লিউ’র আওতায় আসা সাত সংস্থা হল- পরিবেশ অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ। এনবিআর’র চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফী সিদ্দিকী।
এনবিআর’র সদস্য (কাস্টমস: রফতানি, বন্ড এবং আইটি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, এ অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন। ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রজেক্টরের মাধ্যমে ‘সিঙ্গেল উইন্ডো পোর্টাল সম্পর্কে বর্ননা দেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক, ডিজিডিএর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শামীম হায়দার ও বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ইপিবির পরিচালক (নীতি ও পরিকল্পনা) আবু মুকলেস আলমগীর হোসেন, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক মোহাম্মদ মেহেদী হোসেন এবং ডিজিডিএর সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ পৃথক উপস্থাপনা করেন এবং তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানান। বিএসডব্লিউ চালু করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সংস্কার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই পদচিহ্ন হবে সবচেয়ে কার্যকর এবং সর্বজনীন কারণ যে কোনো সরকারই আসুক না কেন, তারা তা করবে না। একাধিক উইন্ডোতে ফিরে যেতে সক্ষম হবেন। এছাড়া আর ১২টা সম্পর্কে আমি একটা সময়সীমা দিয়েছি। সেটা হলো মার্চ। তাদেরকে মার্চেই শুরু করতে হবে। না হলে কী করবেন, আপনারা বলেন।
আমার কাছে কিছু অস্ত্র আছে উপদেষ্টা হিসেবে, সেগুলো না হয় আমি প্রয়োগ করবো।তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ গুরুত্ব ও সহায়তা দেওয়ার সরকারের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করে বলেন, গত ১৫ বছরে এ খাতে অনেক বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাস্তবে তা ব্যয় হয়নি, বরং চলে গেছে। এই ধরনের একটি সিস্টেমকে ফলাফল-ভিত্তিক এবং সময়-নির্ধারিত হিসাবে তৈরি করার উপর জোর দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটি ডিজিটাল অর্থনীতি এবং ডিজিটাল দেশ গড়তে চাই এবং আসুন বিএসডব্লিউ দিয়ে শুরু করি। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিএসডব্লিউ চালু হলে দেশ ধীরে-ধীরে কাগজ-বিহীন সংস্কৃতিতে পরিণত হবে। তিনি আরো বলেন, আন্তঃ-এজেন্সি সমন্বয়ের ক্ষেত্রে আরও ডিজিটালাইজেশন প্রচেষ্টার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।