জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতাল গরিব রোগীদের জন্য আশীর্বাদ
- আপডেট সময় : ১১:৫৪:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫ ০ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএইচ) শয্যা স্বল্পতা সত্ত্বেও দরিদ্র চক্ষু রোগীদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। শের-ই-বাংলা নগরের চক্ষু হাসপাতালটি প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার রোগীকে আউটডোর চিকিৎসা প্রদান করে এবং এখানে যেকোনো ধরনের জটিল চোখের সার্জারি করা হয়। যদিও অনেক রোগী শয্যা সংকটের জন্য ভর্তি হতে পারেন না।হাসপাতালটিতে ২৫০টি শয্যা রয়েছে, যার মধ্যে ১২৮টি বিনামূল্যের শয্যা এবং ৮৮টি শয্যা ও ৩৪টি কেবিন ফি-এর বিনিময়ে পাওয়া যায়। রোগীদের প্রতি এসি কেবিনের জন্য ৮৭৫ টাকা থেকে ১ হাজার ১৭৫ টাকা এবং নন এসি কেবিনের জন্য ৪৭৫-৫৭৫ টাকা দিতে হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আউটডোর রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। নামমাত্র ১০ টাকা টিকিটে রোগীরা চোখের চিকিৎসা নিতে পারেন। এনআইওএইচ’র পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, চক্ষু হাসপাতাল অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য দেশ-বিদেশে সুপরিচিত। তিনি বলেন, এই হাসপাতালে ১০ টাকার টিকিট কিনে চোখের সব ধরনের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হয়।তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।
এ ছাড়া হাসপাতাল থেকে রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়।চৌধুরী বলেন, ‘শয্যা ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ করার কাজ চলছে। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছি। হাসপাতালে কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করে দেন তিনি। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হালিমা সুলতানা হক জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে যাদের অপারেশন প্রয়োজন, তাদের অপারেশনের জন্য নির্ধারিত তারিখ দেওয়া হয়। নির্ধারিত দিনে অপারেশন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে এক্স-রে, রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষা, ইসিজি, সিটি স্ক্যান এবং আল্ট্রা সোনোগ্রামসহ শতভাগ পরীক্ষা করা হয়।প্রশাসনিক কর্মকর্তা রকিবুল হাসান মিশু বলেন, হাসপাতালে ১২টি অপারেশন থিয়েটার থাকায় এখানে সাত ধরনের অপারেশন করা হয়।তিনি বলেন, এ হাসপাতালে ৯টি বিভাগ রয়েছে। এগুলো হলো ছানি, কর্নিয়া, গ্লুকোমা, রেটিনা, অকুলোপ্লাস্টিক, পেডিয়াট্রিক অপথালমোলজি, নিউরো-অপথালমোলজি, কমিউনিটি অপথালমোলজি এবং ভিশন। এখানে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ফ্যাকো সার্জারি দ্বারা ছানি সার্জারি করা হয়। সকালে অপারেশন করা হলে বিকালে রোগীরা বাড়ি যেতে পারেন। প্রতিদিন প্রায় ৬০ জন রোগীর ছানি অপারেশন করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সকল চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হয়।
অস্ত্রোপচারের সময় ওষুধও বিনামূল্যে দেওয়া হয়। চোখের লেন্সও বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।বেশিরভাগ চক্ষু বিশেষজ্ঞেরই এমডি, এফসিপিএস ও উচ্চতর ডিগ্রি রয়েছে। কয়েকজন রোগী জানান, তারা হাসপাতালে উন্নতমানের চিকিৎসা পান। রোগীরা মাত্র ১০ টাকায় টিকিট কিনে সব ধরনের চিকিৎসা নিতে পারেন। রোগী শাহীন জানান, ১০ টাকায় টিকিট কেনার পর তার চোখের অপারেশন করা হয় এবং টাকা ছাড়াই লেন্সও দেওয়া হয়েছে।গাজীপুর থেকে মনির হোসেন হাসপাতালে চোখের চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তিনি বলেন, কিছু ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হলেও বেশির ভাগ ওষুধই হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়েছে।হাসপাতালে বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধা ও অটিস্টিকদের জন্য আলাদা কক্ষ থাকায় আটটি কক্ষে আউটডোর চক্ষু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।