জিয়াউর রহমানই দেশের প্রথম ও প্রধান মুক্তিযোদ্ধা : আমির খসরু
- আপডেট সময় : ১০:৩৪:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে
মহান বিজয়ের জন্য চট্টগ্রামের গুরুত্ব অনেক বেশি মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রামের বিপ্লব উদ্যান থেকে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। তিনিই চট্টগ্রাম রেডিও স্টেশন থেকে প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরের বিপ্লব উদ্যানে বিজয় দিবসের র্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। আজকের স্বাধীনতা পাওয়ার পেছনে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে প্রেরণা, সেটা চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়েছে উল্লেখ করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় গর্বের।
আর এ কারণেই শহিদ জিয়া দেশের প্রথম ও প্রধান মুক্তিযোদ্ধা। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমরা এখনো গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, স্বাধীনতার পর যখন বাকশাল হয়, এই বাকশালের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দল ও সমস্ত সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে, মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের লক্ষ মানুষের ওপর গুম, খুন, নিপীড়ন, নির্যাতন চালানো হয়।
সেখান থেকে আবারো দেশকে মুক্ত করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কার আগামী সংসদের কাজ, বাংলাদেশের মানুষের কাজ। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে, যেভাবে বিগত দিনে নিয়েছে। আগামী দিনের সংস্কারের কথা যদি বলা হয়, আমরা ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। প্রতিজ্ঞা করেছি, বিএনপিসহ প্রায় ৫০টি দলের ঐকমত্যে আমরা আমাদের ৩১ দফার সংস্কার পরিপূর্ণভাবে পালন করব। তিনি বলেন, বিগত দিনের রাজনীতিবিদরা যেহেতু সফল হয়নি, তার জন্য রাজনীতিবিদরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। এবং রাজনীতিবিদরা তার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আগামী দিনের রাজনৈতিক পথ সঠিক পথে চালাবে। সেটাই গণতন্ত্র, এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সংস্কারের কথা তুলে ধরে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের প্রথম সংস্কার করেছেন শহিদ জিয়াউর রহমান। প্রথম সংস্কারটা হলো, একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র। দ্বিতীয় সংস্কার হলো সরকার চালিত অর্থনীতি। যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বাকশালরা লুটপাট করে দেশের দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিল। সেখানে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৃতীয় সংস্কার করেছিলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে সমস্ত বাংলাদেশিরা অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের সমান অধিকার পেয়েছিল। এ জন্য শ্রমিক, কিশোর, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী সকলে মিলে আরেকটি নতুন বাংলাদেশ গড়েছিল সেদিন। তিনি বলেন, আজকের যে গার্মেন্টস শিল্প অর্থনীতিতে প্রথম অবদান রাখছে। সেটা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে গার্মেন্টস শিল্প নীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রথম পিলার।
বিদেশে মানুষ পাঠিয়ে যে রেমিটেন্স আজ বাংলাদেশে আসছে, দেশের মানুষ বাইরে গিয়ে কাজ করছে, সেটার অবদানও জিয়াউর রহমানের। সংস্কার সংস্কার যারা বলে তারা এগুলো বুঝে নাই, চিন্তা করে নাই। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বৈরাচারের পতনের পরে সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রবর্তন করেছিল বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সমস্ত সংস্কারের মাধ্যমে আজকে যে অর্থনীতি বাংলাদেশে দাঁড়িয়েছে, এটা হচ্ছে বিএনপির অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে। আজও বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে। প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে বিএনপি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন কেবলমাত্র বিএনপি করেছে। আর তা সম্ভব হয়েছে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের জন্য। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যেতে নয়, সাধারণ মানুষের অধিকার আদায় করতে চায়। ফ্যাসিবাদ মুক্ত এবারের বিজয় দিবসে জনতার ঢল নেমেছে। মানুষ এখন স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে। মত প্রকাশ করতে পারছে। প্রকৃত স্বাধীনতা উপভোগ করছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিমুদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং, শামসুল আলম, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর। সমাবেশ শেষে জননেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এক বিশাল বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি বের হয়ে নগরীর দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, কাজির দেউড়ি মোড় হয়ে নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় মঞ্চে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ অংশ নেন।