ঢাকা ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ডেঙ্গুতে মৃত্যু বাড়ার কারণ দেরিতে হাসপাতালে আসা : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৪:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪ ৯৫ বার পড়া হয়েছে

দেরি করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসার কারণেই ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুটা বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েচেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর। তিনি বলেন, আমরা মৃত্যুর কারণ জানার জন্য ডেথ রিভিউ শুরু করেছি। আমাদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী,  চিকিৎসার জন্য দেরিতে হাসপাতালে যাওয়ায় মৃত্যু বেশি। রোগীরা একেবারেই শেষ পর্যায়ে হাসপাতালে আসছেন। তখন সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।

আজ সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. জাফর বলেন, ‘দেরিতে হাসপাতালে আসার কারণে ডেঙ্গু রোগী খুব অল্প সময়ে শকে চলে যাচ্ছে। রোগীদের পেটে ও ফুসফুসে পানি আসছে। এমন একটা সময়ে তারা হাসপাতালে আসছেন, যখন আর তাদের জন্য কিছু করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুতে বেশি মারা যাচ্ছে ঢাকায়, যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছর। তবে চট্টগ্রামে শিশু ও বৃদ্ধদের মৃত্যুহার তুলনামূলক বেশি। এর কারণ হলো ডেঙ্গু হলে মানুষ গুরুত্ব কম দিচ্ছে, তাই মৃত্যুটা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গুর পাশাপাশি দেশে চিকনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জিকা ও চিকনগুনিয়া নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই। জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের ৯০ শতাংশর ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণই দেখা যায় না।

এছাড়া এই রোগে মৃত্যু হার শূন্য। তবে এ বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. হালিমুর রশিদ বলেন, ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলোতে হয়ে থাকে। সাধারণত ডেঙ্গু রোগটি শহরাঞ্চলের একটি রোগ, তবে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশেও বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। সবমিলিয়ে এ বছর এখন পর্যন্দ (১ ডিসেম্বর) ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ৯২ হাজার ৩৫১ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৯৪ জন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু রাজধানী ঢাকায় বেশি উল্লেখ করে তিনি জানান, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে সর্বমোট মৃত্যুর ১ হাজার ১৬৩ জনই ছিলেন ঢাকার বাসিন্দা, তবে এ বছর রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৩৯ জনের। গত বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ১২৪ জনের, এ বছর মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। গত বছর খুলনা বিভাগে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ২০৬ জনের, এ বছর মারা গেছে ২৭ জন।

এছাড়া বরিশালে গত বছর ১২৫ জন এবং এ বছর ৫৬ জন, ময়মনসিংহে গত বছর ৬০ জন এবং এ বছর ১৩ জন, রাজশাহীতে গত বছর ১৬ জন এবং এ বছর ৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত  হয়ে মারা গেছেন। এ বছর সিলেটে ডেঙ্গুতে কোন মৃত্যু হয়নি। গত বছর সেখানে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রংপুরে গত বছর ১০ জন মারা গিয়েছিল, এ বছর মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ডেঙ্গুতে মৃত্যু বাড়ার কারণ দেরিতে হাসপাতালে আসা : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

আপডেট সময় : ১১:৫৪:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

দেরি করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসার কারণেই ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুটা বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েচেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর। তিনি বলেন, আমরা মৃত্যুর কারণ জানার জন্য ডেথ রিভিউ শুরু করেছি। আমাদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী,  চিকিৎসার জন্য দেরিতে হাসপাতালে যাওয়ায় মৃত্যু বেশি। রোগীরা একেবারেই শেষ পর্যায়ে হাসপাতালে আসছেন। তখন সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।

আজ সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. জাফর বলেন, ‘দেরিতে হাসপাতালে আসার কারণে ডেঙ্গু রোগী খুব অল্প সময়ে শকে চলে যাচ্ছে। রোগীদের পেটে ও ফুসফুসে পানি আসছে। এমন একটা সময়ে তারা হাসপাতালে আসছেন, যখন আর তাদের জন্য কিছু করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গুতে বেশি মারা যাচ্ছে ঢাকায়, যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছর। তবে চট্টগ্রামে শিশু ও বৃদ্ধদের মৃত্যুহার তুলনামূলক বেশি। এর কারণ হলো ডেঙ্গু হলে মানুষ গুরুত্ব কম দিচ্ছে, তাই মৃত্যুটা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গুর পাশাপাশি দেশে চিকনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জিকা ও চিকনগুনিয়া নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই। জিকা ভাইরাসে আক্রান্তদের ৯০ শতাংশর ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণই দেখা যায় না।

এছাড়া এই রোগে মৃত্যু হার শূন্য। তবে এ বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. হালিমুর রশিদ বলেন, ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলোতে হয়ে থাকে। সাধারণত ডেঙ্গু রোগটি শহরাঞ্চলের একটি রোগ, তবে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশেও বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। সবমিলিয়ে এ বছর এখন পর্যন্দ (১ ডিসেম্বর) ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ৯২ হাজার ৩৫১ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৯৪ জন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু রাজধানী ঢাকায় বেশি উল্লেখ করে তিনি জানান, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে সর্বমোট মৃত্যুর ১ হাজার ১৬৩ জনই ছিলেন ঢাকার বাসিন্দা, তবে এ বছর রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৩৯ জনের। গত বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ১২৪ জনের, এ বছর মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের। গত বছর খুলনা বিভাগে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ২০৬ জনের, এ বছর মারা গেছে ২৭ জন।

এছাড়া বরিশালে গত বছর ১২৫ জন এবং এ বছর ৫৬ জন, ময়মনসিংহে গত বছর ৬০ জন এবং এ বছর ১৩ জন, রাজশাহীতে গত বছর ১৬ জন এবং এ বছর ৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত  হয়ে মারা গেছেন। এ বছর সিলেটে ডেঙ্গুতে কোন মৃত্যু হয়নি। গত বছর সেখানে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রংপুরে গত বছর ১০ জন মারা গিয়েছিল, এ বছর মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।