দেশের কারাগারগুলোর সংস্কারসহ মানোন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে : কারা মহাপরিদর্শক
- আপডেট সময় : ১১:৫৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ৫ বার পড়া হয়েছে
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেছেন, দেশের কারাগারগুলোর সংস্কারসহ বিভিন্ন মানোন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, কারা উপ-মহাপরিদর্শক মনির আহমেদ, সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. আবু তালেব, সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন ও মিডিয়া) মো. জান্নাত উল ফরহাদ উপস্থিত ছিলেন। কারা মহাপরিদর্শক বলেন, কোন মামলার কোন আসামি জামিন পাচ্ছেন তা আমরা জানানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা একটি হট লাইন চালু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সেটি চালু হলে জানতে সুবিধা হবে।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, দেশে এই মুহূর্তে ৬৯টি কারাগার রয়েছে। এসব কারাগারের মোট ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজার। বর্তমানে ৬৫ হাজার কারাবন্দি রয়েছে সারা বাংলাদেশে। কারাগারে বন্দিদের উন্নত খাবার পরিবেশন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কখন কি খাবার পরিবেশন করা হয় তা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি কারাবন্দিরা মোবাইলে স্বজন ও আইনজীবীদের সাথে কখন কথা বলার সুযোগ পান তা তুলে ধরেন। কারা মহাপরিদর্শক বলেন, বর্তমানে দেশে মোট ৬৯টি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি কারাগার অনেক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার বিষয়গুলো জানে। এগুলো দ্রুত সংস্কার, মেরামত ও পুন:নির্মাণ দরকার। এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে পালিয়ে যাওয়া কারাবন্দিদের মধ্যে ১ হাজার ৫শ’ জনকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক।তাদের গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চারজন জেল সুপারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ কিছু অভিযোগের পর্যালোচনা ও তদন্ত চলছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তিনি বলেন, কারা হাসপাতালের কাজটি সম্পন্ন হলে কারাবন্দিদের আর সরকারি হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন হবে না, তখন নিরাপত্তাহীনতাও থাকবে না। নানা মহলের দাবির প্রেক্ষিতে কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকার আমাদেরকে কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের পরামর্শ বা মতামত দেয়নি।
আমরা ৫ আগস্টের পর প্রচুর মানুষের ফিডব্যাক পেয়েছি, সেখানে মূল বিষয় ছিল কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তন। কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী প্রতিটি কারাগারের ঘটনা পর্যালোচনা করেছি। আমাদের কারাগারের অবকাঠামোগত দুর্বলতা ছিল। আরেকটি বাইরের নিরাপত্তা, যেটি পুলিশ সদস্যরা দিয়ে থাকেন। নিরাপত্তা অনুপস্থিতির কারণে আমরা কারাগার থেকে পালানো ঠেকাতে পারিনি। আমরা অভ্যন্তরীণ ও বাইরের নিরাপত্তার কিছু দুর্বলতা শনাক্ত করেছি, সেগুলো সরকারকে জানানো হয়েছে। নরসিংদী জেলা কারাগারের জেল সুপারকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
কারাগারটির ২০১ জন কর্মকর্তা কর্মচারী আহত হয়েছিলেন। তাদের অনেককেই আমরা সহযোগিতা করেছি।রাজনৈতিকভাবে যারা ডিভিশিন পাওয়ার উপযুক্ত তারা সবাই ডিভিশন পাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক মোতাহের হোসেন বলেন, ডিভিশন পাওয়ার দুটি বিধান আছে- একটি হচ্ছে প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তা। আরেকটি সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মন্ত্রী-এমপিরা। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে হয়। এটা তাদের এখতিয়ার। আবেদনের প্রেক্ষিতে তারা ডিভিশনের নির্দেশ দেন। চিকিৎসাধীন বন্দিদের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, কোন সরকারি হাসপাতালে কিন্তু প্রিজন সেল নেই।
এটা আমাদের দুর্বলতা। সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে প্রিজন সেল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য সাধারণ রোগীর সঙ্গে বন্দিদের চিকিৎসা দিতে হয়। কারা হাসপাতাল হয়ে গেলে এ সমস্যার সমাধান হবে। কারা কর্মচারীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তো সার্ভিস। সিভিল সার্ভিসের বিধানের আলোকে কারা কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু কারা অধিদপ্তরে কর্মরর্তাদের মধ্যে পোশাকধারী অস্ত্রধারী দুটোই আছে। একই আইনে কারা অধিদপ্তর পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা মনে করছি। সেজন্য আমরা ভিন্ন আইনের কথা বলছি।