পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের উপর প্রতারণার শামিল : এটর্নি জেনারেল
- আপডেট সময় : ১০:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ৬ বার পড়া হয়েছে
এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের বুকে কুঠারাঘাত। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে পঞ্চদশ সংশোধনী প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানিতে আজ রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল এ কথা বলে। এটর্নি জেনারেল আজ সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলে জনস্বার্থে একটি রিট আনা হয়েছে। সকলের পরিচিত ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ কয়েকজন এই রিটটি দায়ের করেছিলেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে উচ্চ আদালত রুল জারি করে। এখন সে রুলের ওপর শুনানি হচ্ছে।
এ রিটে অনেকেই ইন্টারভেনার হিসেবে দরখাস্ত দিয়েছেন। রেকর্ড থেকে জেনেছি কেউ রুলের পক্ষে আবার কেউ বিপক্ষে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ‘এস এ্যা হোল আমরা রুলটা বাতিল চাই না’। তিনি বলেন, সংবিধানের সংশোধনী কখন করা যায় বা কোন বিধান কখন বাতিল করা যায় এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান কোর্টের একটি রায় আদালতে তুলে ধরেছি। এটর্নি জেনারেল বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস, ফ্যাসিবাদকে প্রলম্বিত এবং সংবিধানের প্রাধান্যকে লংঘন করা হয়েছে। আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে মূল্যহীন করে দেয়া হয়েছে।
আমরা আর্টিকেল ধরে ধরে আজ আদালতে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছি। তিনি জেনারেল বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের উপর প্রতারণার শামিল। পঞ্চদশ সংশোধনী আনার বিষয়ে এ সংক্রান্ত সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করা হয়নি। এ সংশোধনীতে মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে সংবিধানের ওই সংশোধনী আনা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের বৈধতা নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি গত আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন। এই রুল শুনানির জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। এই রুল শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পক্ষভুক্ত হয় বিএনপি ও জামায়াত। এছাড়াও পক্ষভুক্ত হয় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ইনসানিয়াত বিপ্লব ও কয়েকজন আইনজীবী।
পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।