ঢাকা ০৪:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ দফা দাবি আমরা সকল জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই : মির্জা ফখরুল নির্বাচনে কারা আসবে বা আসবে না, সেই সিদ্ধান্ত কমিশনের : বদিউল আলম চাঁদাবাজি আগেও হয়েছে এখনো হচ্ছে, শুধু হাতবদল হয়েছে: ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান গত ৫ আগষ্ট পুলিশের লুট হওয়া ১টি অস্ত্র উদ্ধার শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন ডিসেম্বরের ২১ দিনে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে চাঁদপুরে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বহু যাত্রী উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে উপদেষ্টা পরিষদের শোক

পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ২৩ বার পড়া হয়েছে

পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন। আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) এর সচিবালয়স্থ অফিস কক্ষে তার সঙ্গে মতবিনিময় শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। সরকারি, আধাসরকারি কিংবা ব্যাংকসহ বিভিন্ন চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশনের এই পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে চলে আসছে। এটা প্রায় ৯৬ বছর ধরে চলছে। ব্রিটিশ আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন ও তদন্ত করা হয়। এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে যায়।

কমিশন প্রধান বলেন, অনেক সময় নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারে। পরে দেখা যেতে পারে সে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং ভেরিফিকেশন জরুরি। তবে যেভাবেই হোক পুলিশ ভেরিফিকেশনে যেন ভোগান্তি না হয় সেই বিষয়ে সুপারিশ করছি। পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে দলীয় বা রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকবে, তবে সেখানে প্রার্থী বা তার আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না। আর এক্ষেত্রে এক নম্বর ডকুমেন্ট হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রকে বিবেচনায় নেয়া হবে। তিনি বলেন, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশকে ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয় সেটির ক্ষেত্রেও হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তার পরিবারকে ফোনে জানাতে হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি হচ্ছে আমাদের এক নম্বর শত্রু। পুলিশসহ সরকারের সব বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা গত ১৫ বছরসহ নিকট অতীতে দেখেছি পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগগুলোতে কিভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় কাজ হয়েছে। অনেকে দুর্নীতি করেছে এবং পদোন্নতি নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এসব বন্ধে সুপারিশের কাজ চলছে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, আমরা পুলিশ সংস্কার কমিশনের সব সদস্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের রিপোর্ট দাখিল করার কথা। আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে বেশকিছু কাজ করেছি। এটাকে একটা খসড়ার চূড়ান্ত রূপ বলা যায়। আমরা যেসব সুপারিশ করছি, এর কিছু কিছু বিষয় স্বল্প সময় বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এছাড়া কিছু কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘসময় প্রয়োজন হবে। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে।

আমরা এগুলো সুপারিশ করছি। আমরা শুধু সুপারিশ করার মালিক। আমাদের দায়িত্ব শুধু সুপারিশ করার তবে বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের। বৈঠকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ মো. সাজ্জাত আলী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মো. রফিকুল হাসান, পুলিশের ডিআইজি মো. গোলাম রসুল, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) টাঙ্গাইলের কমান্ডেন্ট (ডিআইজি) মোহাম্মদ আশফাকুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মো. জারিফ রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না

আপডেট সময় : ১১:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন। আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) এর সচিবালয়স্থ অফিস কক্ষে তার সঙ্গে মতবিনিময় শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। সরকারি, আধাসরকারি কিংবা ব্যাংকসহ বিভিন্ন চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশনের এই পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে চলে আসছে। এটা প্রায় ৯৬ বছর ধরে চলছে। ব্রিটিশ আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন ও তদন্ত করা হয়। এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে যায়।

কমিশন প্রধান বলেন, অনেক সময় নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারে। পরে দেখা যেতে পারে সে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং ভেরিফিকেশন জরুরি। তবে যেভাবেই হোক পুলিশ ভেরিফিকেশনে যেন ভোগান্তি না হয় সেই বিষয়ে সুপারিশ করছি। পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে দলীয় বা রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকবে, তবে সেখানে প্রার্থী বা তার আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না। আর এক্ষেত্রে এক নম্বর ডকুমেন্ট হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রকে বিবেচনায় নেয়া হবে। তিনি বলেন, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশকে ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয় সেটির ক্ষেত্রেও হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তার পরিবারকে ফোনে জানাতে হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি হচ্ছে আমাদের এক নম্বর শত্রু। পুলিশসহ সরকারের সব বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা গত ১৫ বছরসহ নিকট অতীতে দেখেছি পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগগুলোতে কিভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় কাজ হয়েছে। অনেকে দুর্নীতি করেছে এবং পদোন্নতি নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এসব বন্ধে সুপারিশের কাজ চলছে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, আমরা পুলিশ সংস্কার কমিশনের সব সদস্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের রিপোর্ট দাখিল করার কথা। আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে বেশকিছু কাজ করেছি। এটাকে একটা খসড়ার চূড়ান্ত রূপ বলা যায়। আমরা যেসব সুপারিশ করছি, এর কিছু কিছু বিষয় স্বল্প সময় বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এছাড়া কিছু কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘসময় প্রয়োজন হবে। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে।

আমরা এগুলো সুপারিশ করছি। আমরা শুধু সুপারিশ করার মালিক। আমাদের দায়িত্ব শুধু সুপারিশ করার তবে বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের। বৈঠকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ মো. সাজ্জাত আলী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্মসচিব (ড্রাফটিং) মো. রফিকুল হাসান, পুলিশের ডিআইজি মো. গোলাম রসুল, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) টাঙ্গাইলের কমান্ডেন্ট (ডিআইজি) মোহাম্মদ আশফাকুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মো. জারিফ রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।