বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারত মিথ্যার বেড়াজাল নির্মাণ করে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে উচ্চ মাত্রার প্রযুক্তির কারণে ওই দেশটি এ বিষয়ে সফল হতে পারছে না। তিনি আজ শনিবার রাজধানীর নিমতলী এলাকাস্থ ‘জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে’ চিকিৎসাধীন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ও গণআন্দোলন চলাকালে পতিত স্বৈরাচারের লালিত-পালিত সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের সর্বশেষ চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে গেলে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র পক্ষ থেকে বার্ণ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থী-জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও তৎপূর্বাপর আহতদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়ার এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
এ সময় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আহতদের প্রতি সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন রুহুল কবির রিজভী। দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের জন্য মায়াকান্না করছে ভারত’- এ অভিযোগ উত্থাপন করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন,‘গণঅভ্যুত্থানে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট’র জন্য মায়াকান্না করছেন বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী দেশটির কতিপয় রাজনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক এবং তথাকথিত সুশীলদের অনেকেই বিশেষ করে আত্মা-বিক্রিকারী মিডিয়ার কর্মীরা। রিজভী বলেন,‘বাংলাদেশে নাকি হিন্দুদের বাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, হিন্দুদেরকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে।
এ ধরনের ডাহা অসত্য ও মিথ্যার বেড়াজাল নির্মাণ করে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তারা। কিন্তু প্রযুক্তির উচ্চ-মাত্রায় প্রবেশের এই যুগে তারা সফল হতে পারছে না, তাই এখন হিংসা-প্রতিহিংসার জ্বালায় প্রতিদিন অপপ্রচার চালাচ্ছে। যে কথাগুলো আমাদের কানে আসছে বা জানতে পারছি, তাতে মনে হচ্ছে, যে ভারতকে আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে জানতাম, যে ভারতে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয় বলে আমরা এতদিন জেনে এসেছি, যে ভারতে অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষের দেশ, সেই দেশটির কতিপয় মানুষের হঠকারিতায় এখন মনে হচ্ছে, বন্ধুত্বসুলভ প্রতিবেশেীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা এখন নতুন করে ভারতেকে শিখতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে দিয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে ভারতের কিছু রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি রক্তচক্ষু দেখিয়ে পক্ষান্তরে তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনার জন্য কুমিরের মায়াকান্না করছেন, এটাই এখন সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে। নিকটতম এই প্রতিবেশী দেশটির কঠোর সমালোচনা করে করে বিএনপি’র এই মুখপাত্র বলেন, ‘ওরা (ভারত) এতো দূর গেছে যে, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের যে পতাকা সেই পতাকা ছিঁড়ে ফেলেছে। কূটনৈতিক নেতৃবৃন্দের গায়ে হাত তুলেছে, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী এটা ভয়ংকর রকমের আন্তর্জাতিক গুরুতর অপরাধ, সেই অপরাধ তারা করেছে।
তারা একবারও ভাবেনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশে কি নিষ্ঠুরতা, কি নির্দয়তা, কি হিংসাশ্রয়ী আচরণ করেছে নিজ দেশেরই নাগরিকদের সাথে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে বার্ন ইউনিটে যে দৃশ্য দেখলাম, এই দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না। গণআন্দোলনের সময় আমি কারাগারে ছিলাম, বের হয়ে অনেক হাসপাতালে গিয়েছি কিন্তু আহতদের ওপর এতো বর্বরতার চিহৃ আগে দেখিনি। বুকফাটা কান্না বেরিয়ে আসে এই দৃশ্য দেখলে, কারো মুখ ঢাকা, মুখ খুললেই মনে হয় এ যেনো কোনো হরর ছবির দৃশ্য দেখছি, কে নিবে তাদের দায়িত্ব? কি করে তারা বাঁচবে? এই পরিস্থিতি তৈরি করে গেছেন পলাতক স্বৈরাচার। আর তাদের জন্য এতো মায়া কান্না? এর জন্য সীমান্তে এসে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়ে তারা নাকি বিক্ষোভ করবে! বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।
রক্তের দামে কেনা বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশকে কেউ মাথা নত করাতে পারবে না। এই বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়ে চোখ রাঙিয়ে নতজানু করানো যাবে না। এই বাংলাদেশে অপরাধীদের বিচার হবে, যারা আমাদের ভাইদেরকে পঙ্গু করেছে, যারা অপরাধ করেছে, তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে। জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে সংশ্লিষ্ট আহত পরিবারের সাথে সাক্ষাতকালে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, এ সেলের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, ফরহাদ আলী সজীব, রুবেল আমিন, শাহাদত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাবিবুল বাশার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান সজীব, ছাত্রদলের নেতা ডা. আওয়াল, নাহিয়ান হোসেন, শারিফুল ইসলাম, মোহান, সেতু, মিসবাহ, জাকির, মাসুদসহ জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকবৃন্দ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ পালোয়ান রুহুল আমিন ঢালী (বীর মুক্তিযোদ্ধা)
যোগাযোগঃ মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ঢালী কমপ্লেক্স, ২১৩/১ ( ৪র্থ তলা), শাহবাগ, ঢাকা- ১০০০
ফোনঃ ০২-৪৪৬১২০৩১, ৪৪৬১২০৩২
মোবাইলঃ ০১৮১৯২১১৩২৭, ০১৭৭৭১৮৯৯৫৯
Copyright © 2025 দৈনিক অগ্নিকন্ঠ. All rights reserved.