বুধবার সরকারি তথ্যে দেখা গেছে যে বেইজিং-ওয়াশিংটন বাণিজ্য যুদ্ধ তীব্রতর হওয়ায় এপ্রিল মাসে চীনের উৎপাদন কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছে। যদিও তার আগের মাসে চীনের উৎপাদন কার্যক্রম এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। বেইজিং থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে। এপ্রিল মাস থেকে চীনের অনেক পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রয়োগ হওয়া ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এর জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নতুন করে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।
জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর (এনবিএস) জানিয়েছে, শিল্প উৎপাদনের প্রধান সূচক পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) এপ্রিল মাসে দাঁড়িয়েছে ৪৯-এ, যা প্রবৃদ্ধি এবং সংকোচনের পার্থক্যকারী ৫০-পয়েন্ট চিহ্নের নিচে। মার্চ মাসে এই সূচক ছিল ৫০.৫, যা গত ১২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এপ্রিলের এই মান ব্লুমবার্গ জরিপে পূর্বাভাসে জানানো মান ৪৯.৭ থেকেও নিচে ছিল, অর্থাৎ পতনটি ছিল প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। এনবিএস-এর পরিসংখ্যানবিদ ঝাও ছিংহে এক বিবৃতিতে বলেন, পূর্ববর্তী দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট উচ্চ ভিত্তি এবং বৈদেশিক পরিবেশের তীব্র পরিবর্তনের প্রভাবে এপ্রিলে উৎপাদন খাতে পিএমআই হ্রাস পেয়েছে।
আর উৎপাদন বহির্ভূত খাতে সেবাখাতের কার্যক্রম পরিমাপক পিএমআই উৎপাদন সূচক এপ্রিল মাসে দাঁড়িয়েছে ৫০.৪-এ, যা মার্চ মাসের ৫০.৮ থেকে কম। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত অর্থনীতির এ বাণিজ্যে ব্যাঘাত ব্যবসাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে, ভোক্তাদের জন্য দাম বাড়িয়ে দিতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার কারণ হতে পারে। গত মাসে চীনের রপ্তানি ১২ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গিয়েছিল, কারণ ব্যবসাগুলো উচ্চ শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই পণ্য পাঠাতে তারা তাড়াহুড়ো করেছিল।
এছাড়া পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং একটি মন্তব্যে লিখেছেন‘এপ্রিল মাসে দুর্বল উৎপাদন পিএমআই-এর কারণ হচ্ছে বাণিজ্য যুদ্ধ’। তিনি আরও জানান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের ম্যাক্রো ডেটা আরও দুর্বল হবে… কারণ বাণিজ্য নীতির অনিশ্চয়তা ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তে বিলম্ব ঘটাচ্ছে’। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে পারেনি, মন্থর অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং দীর্ঘমেয়াদি আবাসন খাতের সংকটের কারণে এখনও তারা সংগ্রাম করছে।
গত বছর কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু আগ্রাসী প্রণোদনা দেওয়ার পদক্ষেপ নেয়। যার মধ্যে সুদের হার কমানো এবং বাড়ি কেনার কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করার মতো পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত ছিল। মার্চ মাসে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠকে নেতারা ঘোষণা করেন, ২০২৫ সালে ১ কোটি ২০ লাখ নতুন শহরভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। তারা এটাও বলেন, তারা ২০২৪ সালের মতোই এবছরও ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। যা অনেক অর্থনীতিবিদের মতে এটি একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ পালোয়ান রুহুল আমিন ঢালী (বীর মুক্তিযোদ্ধা)
যোগাযোগঃ মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ঢালী কমপ্লেক্স, ২১৩/১ ( ৪র্থ তলা), শাহবাগ, ঢাকা- ১০০০
ফোনঃ ০২-৪৪৬১২০৩১, ৪৪৬১২০৩২
মোবাইলঃ ০১৮১৯২১১৩২৭, ০১৭৭৭১৮৯৯৫৯
Copyright © 2025 দৈনিক অগ্নিকন্ঠ. All rights reserved.