ঢাকা ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টাকে কাতারের সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদান জনদুর্ভোগ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান তিস্তার পানি প্রশ্নে কোনো কূটনৈতিক রাজনীতি দেখতে চাই না: তারেক রহমান সরকারি খাল-বিল দখল করে ঘুমানোর সময় শেষ: ডিএনসিসি প্রশাসক তুরস্কের ইস্তাম্বুলের উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত বাংলাদেশকে বারবার স্বৈরাচারের কবলে পড়তে দেওয়া হবে না: জাহিদুল ইসলাম আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশ: আইএমএফ বিগত সরকারে দাবি উত্থাপিত হলে রাষ্ট্র তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে ১৭৪ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ

সরকারি খাল-বিল দখল করে ঘুমানোর সময় শেষ: ডিএনসিসি প্রশাসক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২০:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ০ বার পড়া হয়েছে

অবৈধ দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, সরকারি খাল-বিল দখল করে যারা ঘুমাচ্ছেন তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং বঙ্গবন্ধুর নামে ক্লাব গঠন করে ঢাকা শহরের খাল, জলাধার ও পাবলিক প্লেসগুলো দখল করা হয়েছিল। যারা সরকারি খাল-বিল দখল করে এখনো নাকে তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। যারা সরকারি জমি, খাস জমি দখল করে স্থাপনা বানিয়ে ভোগদখল করছেন, তাদের ঘুম থেকে জেগে ওঠে দখল করা জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে।

হাইক্কার খালের উচ্ছেদ থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনারা নিজ দায়িত্বে স্থাপনা সরিয়ে নিন। আমরা আসবো, অবৈধ দখলদারদের কোন নোটিশ দিব না। সরাসরি উচ্ছেদ করা হবে। ডিএনসিসি প্রশাসক আজ বুধবার মোহাম্মদপুর হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধ ভবন উচ্ছেদ অভিযানকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম।

সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এই অভিযানে হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ এবং তিনতলা ভবনের আংশিক গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৫টি টিনের ঘড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অভিযান শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। উচ্ছেদ অভিযান করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাঠ দখলমুক্ত করা হচ্ছে, অবৈধ দোকান ও হকার উচ্ছেদ এবং ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করা হয়েছে।

বাড়ি ৩ তলা হোক ১০ তলা হোক আমরা সব একটা একটা করে ভেঙে দেব। আমাদের লোকবল কম ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ করা হবে। আজকে নিরাপত্তা বাহিনী, আর্মি আছে, অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি রেখেছি। কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, ‘এই খালের (হাইক্কার) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল খনন করে লাউতলা খালের সাথে সংযোগ করে দিব। ডিএনসিসির কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে দিয়ে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। ফলে বৃষ্টির পানি, বন্যার পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তুরাগে যাবে। প্রশাসক বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মোহাম্মদপুরের এই খাল পরিদর্শনে এসে দেখি খালে বালু ফেলে ভরাট করছে।

খালের ভিতরে অনেকগুলো স্থাপনা হয়ে গেছে। আমি তাৎক্ষণিক অবৈধ ভবনগুলো ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিলে ভবনের মালিকরা আমাকে জানিয়েছে এগুলো খালের সীমানায় পড়ে নাই, তারা চ্যালেঞ্জ করেছে। পরে আমাদের সার্ভেয়ার এবং তাদের সার্ভেয়ার যৌথভাবে সার্ভে করেছে। যৌথ সার্ভেতে দেখা গেছে একটি দোতলা বাড়ি, একটি তিনতলা বাড়ি এবং মসজিদের একটি অংশসহ বেশ কয়েকটি টিনের ঘর খালের সীমানায় পড়েছে। কিন্তু তারা নিজেরা ভেঙে নেয়নি। তাই আজকে ডিএনসিসি থেকে আমরা অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভবন ও স্থাপনা উচ্ছেদ করছি।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, ‘তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে আমি নিজে গিয়েছি। রাস্তায় ট্রাকের পার্কিং বন্ধে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করছি আগামী কোরবানির ঈদের আগে এটি সমাধান করতে পারবো। সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিরপুর-১০ এবং ফার্মগেট ইন্দিরা রোড সম্পূর্ণভাবে ফুটপাতের হকার ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা মুক্ত হবে। আমি অভিযান শুরু করেছি। রাতে ও দিনে অভিযান পরিচালনা করবো। আসন্ন বর্ষায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের টিম সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে।

গতকালও ডিএনসিসি এলাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা করেছি। ডেঙ্গু মোকাবেলা করার জন্য আমরা মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। মশার ওষুধ ঠিকমতো ছিটানোর কাজটি মনিটরিং করার জন্য আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়ার পরিকল্পনা করছি। তারপরও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা যেন নিশ্চিত করা হয় সেই প্রস্তুতি নিয়ে হাসপাতালগুলোর সাথে কাজ করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সরকারি খাল-বিল দখল করে ঘুমানোর সময় শেষ: ডিএনসিসি প্রশাসক

আপডেট সময় : ১২:২০:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

অবৈধ দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, সরকারি খাল-বিল দখল করে যারা ঘুমাচ্ছেন তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং বঙ্গবন্ধুর নামে ক্লাব গঠন করে ঢাকা শহরের খাল, জলাধার ও পাবলিক প্লেসগুলো দখল করা হয়েছিল। যারা সরকারি খাল-বিল দখল করে এখনো নাকে তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। যারা সরকারি জমি, খাস জমি দখল করে স্থাপনা বানিয়ে ভোগদখল করছেন, তাদের ঘুম থেকে জেগে ওঠে দখল করা জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে।

হাইক্কার খালের উচ্ছেদ থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনারা নিজ দায়িত্বে স্থাপনা সরিয়ে নিন। আমরা আসবো, অবৈধ দখলদারদের কোন নোটিশ দিব না। সরাসরি উচ্ছেদ করা হবে। ডিএনসিসি প্রশাসক আজ বুধবার মোহাম্মদপুর হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধ ভবন উচ্ছেদ অভিযানকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম।

সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এই অভিযানে হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ এবং তিনতলা ভবনের আংশিক গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৫টি টিনের ঘড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অভিযান শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। উচ্ছেদ অভিযান করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাঠ দখলমুক্ত করা হচ্ছে, অবৈধ দোকান ও হকার উচ্ছেদ এবং ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করা হয়েছে।

বাড়ি ৩ তলা হোক ১০ তলা হোক আমরা সব একটা একটা করে ভেঙে দেব। আমাদের লোকবল কম ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ করা হবে। আজকে নিরাপত্তা বাহিনী, আর্মি আছে, অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি রেখেছি। কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, ‘এই খালের (হাইক্কার) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল খনন করে লাউতলা খালের সাথে সংযোগ করে দিব। ডিএনসিসির কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে দিয়ে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। ফলে বৃষ্টির পানি, বন্যার পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তুরাগে যাবে। প্রশাসক বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মোহাম্মদপুরের এই খাল পরিদর্শনে এসে দেখি খালে বালু ফেলে ভরাট করছে।

খালের ভিতরে অনেকগুলো স্থাপনা হয়ে গেছে। আমি তাৎক্ষণিক অবৈধ ভবনগুলো ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিলে ভবনের মালিকরা আমাকে জানিয়েছে এগুলো খালের সীমানায় পড়ে নাই, তারা চ্যালেঞ্জ করেছে। পরে আমাদের সার্ভেয়ার এবং তাদের সার্ভেয়ার যৌথভাবে সার্ভে করেছে। যৌথ সার্ভেতে দেখা গেছে একটি দোতলা বাড়ি, একটি তিনতলা বাড়ি এবং মসজিদের একটি অংশসহ বেশ কয়েকটি টিনের ঘর খালের সীমানায় পড়েছে। কিন্তু তারা নিজেরা ভেঙে নেয়নি। তাই আজকে ডিএনসিসি থেকে আমরা অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভবন ও স্থাপনা উচ্ছেদ করছি।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, ‘তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে আমি নিজে গিয়েছি। রাস্তায় ট্রাকের পার্কিং বন্ধে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করছি আগামী কোরবানির ঈদের আগে এটি সমাধান করতে পারবো। সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিরপুর-১০ এবং ফার্মগেট ইন্দিরা রোড সম্পূর্ণভাবে ফুটপাতের হকার ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা মুক্ত হবে। আমি অভিযান শুরু করেছি। রাতে ও দিনে অভিযান পরিচালনা করবো। আসন্ন বর্ষায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের টিম সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে।

গতকালও ডিএনসিসি এলাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা করেছি। ডেঙ্গু মোকাবেলা করার জন্য আমরা মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। মশার ওষুধ ঠিকমতো ছিটানোর কাজটি মনিটরিং করার জন্য আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা নেয়ার পরিকল্পনা করছি। তারপরও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা যেন নিশ্চিত করা হয় সেই প্রস্তুতি নিয়ে হাসপাতালগুলোর সাথে কাজ করছি।