ভোক্তাদের নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা ও খাদ্যজনিত রোগের বিস্তার রোধ এবং সুস্থ প্রজন্ম গড়তে হিমায়িত খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ হিমায়িত মাংস যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষণ করা হয়। তাই হিমায়িত মাংস এবং দুধ থাকে দূষণমুক্ত ও নিরাপদ। হিমায়িত মাংস ও দুধ খাওয়ার জন্য নাগরিক জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ বুধবার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট এলাকায় সপ্তাহ ব্যাপী প্রচারণা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।
সচেতন ভোক্তা, স্বাস্থ্যবান পরিবার-নিরাপদ খাবারে হিমায়িত দুধ-মাংসের অগ্রাধিকার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই প্রচারণা চলবে আগামী ১৮ মার্চ পর্যন্ত। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় আইআরজি ডেভলপমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (আইআরজি ডিএসএল) রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এই ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে।ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার বলেন, ‘হিমায়িত খাবার খারাপ এই চিন্তা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমরা বাজার থেকে যে সকল মাংস কিনে খাই, তার থেকে হিমায়িত খাবার অনেকটাই নিরাপদ।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, খোলা বাজারের মাংসে দূষণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এছাড়া মাংস দীর্ঘসময় খোলা জায়গায় রাখলে জীবাণু দ্বারা দুষিত হয়ে পচন ধরতে পারে। বাজারে মাংসগুলো কখন কেটে রাখে তার ঠিক থাকে না। কেটে রাখা মাংসে দুই ঘন্টা পর থেকে বিভিন্ন জীবানু আক্রমণ শুরু করে। টাকা দিয়ে কেন আমরা জীবানু কিনে খাবো। হিমায়িত হলে এই জীবানু আক্রমণ করতে পারতো না। হিমায়িত মাংস এবং দুধ থাকে অনেকটাই দূষণমুক্ত ও নিরাপদ। উন্নত দেশে কিন্তু হিমায়িত খাবার খাচ্ছে।
বাসনা আক্তার বলেন, যত্রতত্র গবাদি প্রাণি, হাঁস-মুরগি ইত্যাদি জবাই করার ফলে প্রতিনিয়ত বাজারের পরিবেশ দুষিত হচ্ছে ও রোগব্যাধির সংক্রমণ বাড়ছে। অপরিচ্ছন্ন রক্ত, বর্জ্য ও মলমূত্র সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটি, বাতাস ও পানি দুষিত হচ্ছে। অপনিরাপদ হয়ে উঠছে খাদ্যদ্রব্য। এসবের প্রতিকারের জন্য জনসচেতনতা বাড়ানো খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশিষ্ট কৃষি ও প্রাণিসম্পদ অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্প টিম লিডার প্রফেসর ড. এস এম ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রচলিত ভুল ধারণা ভাঙতে হবে।
অনেকেই মনে করেন, ফ্রিজে রাখা খাবারের স্বাদ কমে যায়- এটি ভুল। আধুনিক হিমায়িত সংরক্ষণ পদ্ধতি খাবারের আসল স্বাদ ও গুণগত মান বজায় রাখে। প্রাণিসম্পদ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ ড. এস এম রাজিউর রহমান বলেন, খোলা বাজারের মাংস বেশি সতেজ সুস্বাদু হয়- এই বিশ্বাসও ভুল। খোলা বাজারে দীর্ঘ সময় খোলা থাকা মাংস জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়ে দ্রুত নষ্ট হতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
একইসঙ্গে পাস্তুরিত দুধ, ঠান্ডা দুধ ও ইউএইচটি দুধ খাঁটি, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ। এই ধরনের দুধ উচ্চমানের প্রযুক্তিতে জীবাণুমুক্ত করা হয়, যা প্রতিদিনের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য অপরিহার্য। আইআরজিএসএল’র চেয়ারম্যান সুখরঞ্জন সুতার বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হলে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। একমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা আগামী প্রজন্মের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে পারি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ পালোয়ান রুহুল আমিন ঢালী (বীর মুক্তিযোদ্ধা)
যোগাযোগঃ মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ঢালী কমপ্লেক্স, ২১৩/১ ( ৪র্থ তলা), শাহবাগ, ঢাকা- ১০০০
ফোনঃ ০২-৪৪৬১২০৩১, ৪৪৬১২০৩২
মোবাইলঃ ০১৮১৯২১১৩২৭, ০১৭৭৭১৮৯৯৫৯
Copyright © 2025 দৈনিক অগ্নিকন্ঠ. All rights reserved.