ঢাকা ০৮:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জনবল বাড়াবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বিডিআর হত্যাকাণ্ডবিষয়ক তথ্য চেয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের গণবিজ্ঞপ্তি কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলকভাবে সি-ট্রাক চলাচল বিশ্বে পূর্ব শত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে: উপ-প্রেস সচিব জনগণের ক্ষতি করার জন্য আওয়ামী লীগ ওঁৎ পেতে আছে: এ্যানি বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানালো যুক্তরাষ্ট্র সংস্কার ও বিচারের আগে নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে: জামায়াত আমির এসএসসি পরীক্ষার তৃতীয় দিন অনুপস্থিত ২৭ হাজার ৯০৫ জন ‘র’ প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে বাংলাদেশে রাজনীতি চলবে না: হাসনাত ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান

‘হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল’ বন্ধ করতে হবে ওয়াশিংটনকে: বেইজিং

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৮:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ অবসানে আলোচনায় বসতে হলে চীনকেই প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেইজিং। বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের উচিত ‘হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল’ বন্ধ করে সমতার ভিত্তিতে সংলাপে বসা। বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চায়, তাহলে তাকে চরম চাপ প্রয়োগ, হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল বন্ধ করতে হবে এবং সমতা, পারস্পরিক সম্মান ও পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে চীনের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘চীনের অবস্থান স্পষ্ট- শুল্কযুদ্ধ বা বাণিজ্যযুদ্ধে কোনো পক্ষই জেতে না। চীন যুদ্ধ চায় না, কিন্তু ভয়ও পায় না।

চলতি বছর ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা আগে থেকেই আরোপিত শুল্কের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুরুতে ফেন্টানিল সরবরাহ চেইনে চীনের কথিত ভূমিকার অভিযোগ তুলে তিনি ২০ শতাংশ শুল্ক বসান। এরপর ‘অন্যায্য বাণিজ্যনীতি’র অভিযোগে আরও ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।তবে কিছু প্রযুক্তিপণ্যের- যেমন স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ- ক্ষেত্রে সাময়িক ছাড় দিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউস মঙ্গলবার বলেছে, এই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব চীনের। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিটের পাঠ করা ট্রাম্পের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গোটা বিষয় এখন চীনের কোর্টে। চীন আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য। আমরা চীনের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য নই।

চীনের প্রবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়াচীন জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি প্রত্যাশিত চেয়ে ভালো- ৫.৪ শতাংশ হারে বেড়েছে। কারণ, মার্কিন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই রপ্তানিকারকেরা দ্রুত পণ্য সরবরাহ সম্পন্ন করেছেন। মুডিজ অ্যানালিটিকসের হেরন লিম বলেন, ‘এপ্রিলে যে উত্তেজনা বাড়ছে, তার প্রভাব দ্বিতীয় প্রান্তিকে পড়বে। শুল্কের কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলো বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজবে, ফলে চীনা রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে এবং বিনিয়োগে ধস নামবে। জাপানের দূত রিওসেই আকাজাওয়া বুধবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের সঙ্গে আলোচনার আগে আশাবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা উভয় দেশের জন্যই একটি ‘উইন-উইন’ ফলাফল চাই।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করব। এদিন হোন্ডা জানায়, তাদের হাইব্রিড সিভিক গাড়ির উৎপাদন জাপান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা হবে। যদিও কোম্পানির বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে এর পরিমাণ খুবই সামান্য। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র জানান, সিদ্ধান্তটি কোনো একক কারণে নয়, বরং প্রতিষ্ঠার পর থেকেই হোন্ডার নীতি হলো- যেখানে চাহিদা, সেখানেই উৎপাদন। দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থমন্ত্রী ছই সাং-মক আগামী সপ্তাহে বেসেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো পারস্পরিক শুল্ক আরোপ যতটা সম্ভব বিলম্বিত করা এবং কোরীয় কোম্পানিগুলোর জন্য অনিশ্চয়তা হ্রাস করা, যারা শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, বরং বৈশ্বিক বাজারেও কাজ করে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই ট্রাম্প চীনের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করছেন। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বাণিজ্য সহযোগীর ওপর ১০ শতাংশের ‘বেসলাইন’ শুল্ক আরোপ করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু প্রযুক্তিপণ্যকে এই শুল্কের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এদিকে এশিয়াজুড়ে চিপ-ভিত্তিক কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটেছে। কারণ, এনভিডিয়া জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন লাইসেন্স বিধিনিষেধের কারণে তারা চীনে যে প্রধান চিপ বিক্রি করত, তাতে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছে তারা।ট্রাম্প মঙ্গলবার এক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, যার ফলাফলস্বরূপ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, বিরল মৃত্তিকা ধাতু এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের- যেমন স্মার্টফোন- ওপর নতুন শুল্ক আরোপে গড়াতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

‘হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল’ বন্ধ করতে হবে ওয়াশিংটনকে: বেইজিং

আপডেট সময় : ১১:৫৮:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ অবসানে আলোচনায় বসতে হলে চীনকেই প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেইজিং। বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের উচিত ‘হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল’ বন্ধ করে সমতার ভিত্তিতে সংলাপে বসা। বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চায়, তাহলে তাকে চরম চাপ প্রয়োগ, হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল বন্ধ করতে হবে এবং সমতা, পারস্পরিক সম্মান ও পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে চীনের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘চীনের অবস্থান স্পষ্ট- শুল্কযুদ্ধ বা বাণিজ্যযুদ্ধে কোনো পক্ষই জেতে না। চীন যুদ্ধ চায় না, কিন্তু ভয়ও পায় না।

চলতি বছর ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা আগে থেকেই আরোপিত শুল্কের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুরুতে ফেন্টানিল সরবরাহ চেইনে চীনের কথিত ভূমিকার অভিযোগ তুলে তিনি ২০ শতাংশ শুল্ক বসান। এরপর ‘অন্যায্য বাণিজ্যনীতি’র অভিযোগে আরও ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।তবে কিছু প্রযুক্তিপণ্যের- যেমন স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ- ক্ষেত্রে সাময়িক ছাড় দিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউস মঙ্গলবার বলেছে, এই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব চীনের। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিটের পাঠ করা ট্রাম্পের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গোটা বিষয় এখন চীনের কোর্টে। চীন আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য। আমরা চীনের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য নই।

চীনের প্রবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়াচীন জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি প্রত্যাশিত চেয়ে ভালো- ৫.৪ শতাংশ হারে বেড়েছে। কারণ, মার্কিন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই রপ্তানিকারকেরা দ্রুত পণ্য সরবরাহ সম্পন্ন করেছেন। মুডিজ অ্যানালিটিকসের হেরন লিম বলেন, ‘এপ্রিলে যে উত্তেজনা বাড়ছে, তার প্রভাব দ্বিতীয় প্রান্তিকে পড়বে। শুল্কের কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলো বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজবে, ফলে চীনা রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে এবং বিনিয়োগে ধস নামবে। জাপানের দূত রিওসেই আকাজাওয়া বুধবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের সঙ্গে আলোচনার আগে আশাবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা উভয় দেশের জন্যই একটি ‘উইন-উইন’ ফলাফল চাই।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করব। এদিন হোন্ডা জানায়, তাদের হাইব্রিড সিভিক গাড়ির উৎপাদন জাপান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা হবে। যদিও কোম্পানির বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে এর পরিমাণ খুবই সামান্য। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র জানান, সিদ্ধান্তটি কোনো একক কারণে নয়, বরং প্রতিষ্ঠার পর থেকেই হোন্ডার নীতি হলো- যেখানে চাহিদা, সেখানেই উৎপাদন। দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থমন্ত্রী ছই সাং-মক আগামী সপ্তাহে বেসেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো পারস্পরিক শুল্ক আরোপ যতটা সম্ভব বিলম্বিত করা এবং কোরীয় কোম্পানিগুলোর জন্য অনিশ্চয়তা হ্রাস করা, যারা শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, বরং বৈশ্বিক বাজারেও কাজ করে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই ট্রাম্প চীনের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করছেন। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বাণিজ্য সহযোগীর ওপর ১০ শতাংশের ‘বেসলাইন’ শুল্ক আরোপ করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু প্রযুক্তিপণ্যকে এই শুল্কের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এদিকে এশিয়াজুড়ে চিপ-ভিত্তিক কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটেছে। কারণ, এনভিডিয়া জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন লাইসেন্স বিধিনিষেধের কারণে তারা চীনে যে প্রধান চিপ বিক্রি করত, তাতে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছে তারা।ট্রাম্প মঙ্গলবার এক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, যার ফলাফলস্বরূপ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, বিরল মৃত্তিকা ধাতু এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের- যেমন স্মার্টফোন- ওপর নতুন শুল্ক আরোপে গড়াতে পারে।