ঢাকা ১২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : বক্তারা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে

হাজার ছাত্র-জনতার শহিদ হওয়ার বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছে। এ গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে জাতীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের আয়োজনে ‘সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের মাধ্যমে ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার ও বাক স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। এই অর্জনকে মূল্যায়ন করতে হবে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড.আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। জাতীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, শিল্পপতি শিক্ষানুরাগী ও লেখক আবুল কাশেম হায়দার,ব্যাংকার,ইতিহাসবিদ ও গবেষক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব নূর হোসেন রানা প্রমুখ। সংগঠনের সহ সভাপতি মাসুম শেখ অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আমরা। আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। নিজেদের সংস্কৃতি কি,এর আদি-অন্ত কি সে সম্পর্কেও জানতে ও ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের নানা ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে সব দেশেই স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে। যারা বলেছিল কেউ তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না, সে সব ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন অনিবার্যভাবে হয়েছে। ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকার সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়েছে। দেশে এখন দ্রুত সংস্কারের কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক নীতিমালা তৈরী করা প্রয়োজন। ফ্যাসীবাদের যারা সমর্থক তাদের রুখতে হবে।

কোনভাবেই ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্মা ও স্বৈরশাসকদের ক্ষমা করা যাবে না। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশকে রক্ষার প্রসংগ টেনে তিনি বলেন, নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুনরুদ্ধার করা বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁকে জয়ী হতে হবে। এলক্ষ্যে দেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা এ সরকারের ব্যর্থতা মানে বাংলাদেশের ব্যর্থতা। সভাপতির বক্তৃতায় রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। স্বৈরাচার সরকারের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের ছড়ানো বিষ যেন কোন সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে।

ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, যুগে যুগে পৃথিবীতে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। আমাদের দেশেও রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে। পট পরিবর্তন হবে,নানাধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। কিন্তু আমাদের নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিলে চলবে না। অন্যে কি করছে,তারচেয়ে জরুরী বিষয় হলো নিজে কি করছি। ফলে আপোষ নয়, নিজের নীতি ও আদর্শের ব্যাপারে নতি স্বীকার করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, এখনকার যারা দেশটা স্বাধীন করলো সেই ‘জেন জি’দের মতাদর্শের সঙ্গে বড়দের ও অভিভাবকদের মানসিকতারও পরিবর্তন ঘটাতে হবে। পরে কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে : বক্তারা

আপডেট সময় : ১১:৫৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

হাজার ছাত্র-জনতার শহিদ হওয়ার বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছে। এ গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে জাতীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের আয়োজনে ‘সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনের মাধ্যমে ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার ও বাক স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। এই অর্জনকে মূল্যায়ন করতে হবে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড.আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। জাতীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, শিল্পপতি শিক্ষানুরাগী ও লেখক আবুল কাশেম হায়দার,ব্যাংকার,ইতিহাসবিদ ও গবেষক মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব নূর হোসেন রানা প্রমুখ। সংগঠনের সহ সভাপতি মাসুম শেখ অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আমরা। আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। নিজেদের সংস্কৃতি কি,এর আদি-অন্ত কি সে সম্পর্কেও জানতে ও ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের নানা ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে সব দেশেই স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে। যারা বলেছিল কেউ তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না, সে সব ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন অনিবার্যভাবে হয়েছে। ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকার সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়েছে। দেশে এখন দ্রুত সংস্কারের কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক নীতিমালা তৈরী করা প্রয়োজন। ফ্যাসীবাদের যারা সমর্থক তাদের রুখতে হবে।

কোনভাবেই ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্মা ও স্বৈরশাসকদের ক্ষমা করা যাবে না। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশকে রক্ষার প্রসংগ টেনে তিনি বলেন, নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুনরুদ্ধার করা বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁকে জয়ী হতে হবে। এলক্ষ্যে দেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা এ সরকারের ব্যর্থতা মানে বাংলাদেশের ব্যর্থতা। সভাপতির বক্তৃতায় রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। স্বৈরাচার সরকারের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের ছড়ানো বিষ যেন কোন সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে।

ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, যুগে যুগে পৃথিবীতে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। আমাদের দেশেও রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে। পট পরিবর্তন হবে,নানাধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। কিন্তু আমাদের নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিলে চলবে না। অন্যে কি করছে,তারচেয়ে জরুরী বিষয় হলো নিজে কি করছি। ফলে আপোষ নয়, নিজের নীতি ও আদর্শের ব্যাপারে নতি স্বীকার করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, এখনকার যারা দেশটা স্বাধীন করলো সেই ‘জেন জি’দের মতাদর্শের সঙ্গে বড়দের ও অভিভাবকদের মানসিকতারও পরিবর্তন ঘটাতে হবে। পরে কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।